হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী থেকে সংক্ষিপ্ত কিছু অংশের বর্ণনা
পরিচিতি
হযরত মুহাম্মাদ সাঃ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম। জন্ম তারিখঃ ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে ২৯ আগস্ট বা ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার, হিজরত পূর্ব ৫৩ সাল। মৃত্যুঃ ৮ই জুন ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে রবিবার বা ১১ হিজরি সালের রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সন্ধ্যায়। পিতাঃ আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম। মাতাঃ মায়ের নাম আমিনা, দুধ মা হালিমা বিনতে আবু জুয়াইবের (অপর নাম হালিমা সাদিয়া), জন্মস্থানঃ হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) বর্তমান সৌদি আরবের মক্কা শহরের কুরাইশ বংশের বনু হাশিম গোত্রে জন্ম গ্রহণ করেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) বর্তমান সৌদি আরবের মক্কার শহরের কুরাইশ বংশের বনু হাশিম গোত্রে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে ২৯ আগস্ট বা আরবি রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ জন্ম গ্রহণ করেন। যেহেতু হযরত মুহাম্মদ সাঃ তিনি নিজে কোনো মন্তব্য করেছেন বলে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বিধায় এটি নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর পিতা আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিব হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জন্মের পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেন। তিনি হালিমা বিনতে আবু জুয়াইবের (অপর নাম হালিমা সাদিয়া) এর দুগ্ধ পান করে বেড়ে ওঠেন। পরবর্তীতে ছয় বছর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি মা আমেনার সাথে কাটান।
মা আমিনা, হযরত মুহাম্মদ সাঃ এবং অন্যান্যদের নিয়ে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মদিনায় যান। সেখানে একমাস অতিবাহিত হওয়ার পরে মক্কায় ফেরার পথে আরওয়া নামক স্থানে এসে মা আমেনা গুরুতর অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মা আমেনার মৃত্যুর পরে দাদা আবদুল মুত্তালিব হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে নিয়ে মক্কায় পৌঁছেন। এর পর থেকে দাদা আব্দুল মুত্তালিব হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর দেখাশোনা করেন। ৮ বছর বয়সে আব্দুল মুত্তালিব মৃত্যুবরণ করেন।
পরবর্তীতে হযরত মুহাম্মদ সাঃ আবু তালিব এর কাছে বেড়ে ওঠেন। হযরত মুহাম্মদ সাঃ উত্তম চরিত্র ও সদাচরণের কারণে পরিচিত মহলের সবাই তাকে আল-আমিন, বিশ্বস্ত, বিশ্বাসযোগ্য, আস্থাভাজন, আল-সিদ্দিক সত্যবাদী বলে সম্বোধন করতেন। ২৫ বছর বয়সে তিনি খাদিজার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, যখন খাদিজার বয়স ছিল ৪০। হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর ০৭ জন সন্তান জন্মগ্রহণ করেন। যার মধ্যে ০৪ জন মেয়ে, ০৩ জন ছেলে। ১। কাসিম, ২। জয়নব, ৩। রুকাইয়া, ৪। উম্মে কুলসুম, ৫। ফাতিমা এবং ৬। আবদুল্লাহ। ৭। ইব্রাহিম। ছেলে সন্তান ০৩ জন শৈশব কালেই মারা যান। হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর ৩৫ বছর বয়সে কা’বা গৃহের পুনঃনির্মাণ করেন।
৪০ বছর বয়সে হযরত মুহাম্মদ সাঃ নবুয়াত লাভ করেন। প্রথমে তিনি গোপনে এবং পরবর্তীতে ০৩ বছর পরে তিনি প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার শুরু করেন। হযরত মুহাম্মদ সাঃ মদিনায় হিজরত করেন।
জীবনের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা
মদীনায় হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা ১) ৬২২ মদিনায় হিজরত, ২) ৬২৩ কাফেলা আক্রমণের সূচনা, ৩) ৬২৩ আল কুদর আক্রমণ, ৪) ৬২৪ বদরের যুদ্ধ: মুসলিমগণ মক্কাবাসীদেরকে পরাজিত করেন, ৫) ৬২৪ সাওকিকের যুদ্ধ, আবু সুফিয়ান বন্দী হন, ৬) ৬২৪ বনু কায়নুকা গোত্রকে বহিষ্কার, ৭) ৬২৪ থি আমিরের আক্রমণ, ৮) মুহাম্মাদ গাতাফান গোত্র আক্রমণ, ৯) ৬২৪ খালেদ বিন সুফিয়ান ও আবু রাফির গুপ্তহত্যা, ১০) ৬২৫ উহুদের যুদ্ধ: মক্কাবাসী মুসলিমদের পরাজিত করে,
১১) ৬২৫ বির মাওনা ও আল রাজির শোকগাঁথা, ১২) ৬২৫ হামরা আল-আসাদের আক্রমণ, শত্রুপক্ষ ভীত হয়ে পশ্চাদপসরণ করে, ১৩) ৬২৫ বনু নাদির গোত্র আক্রমণ এবং বহিষ্কার, ১৪) ৬২৫ নজদ আক্রমণ, বদর আক্রমণ এবং দুমাতুল জান্দাল আক্রমণ, ১৫) ৬২৭ খন্দকের যুদ্ধ, ১৬) ৬২৭ বনু কুরায়জা গোত্র আক্রমণ, সফল অবরোধ, ১৭) ৬২৮ হুদায়বিয়ার সন্ধি, কাবায় প্রবেশাধিকার লাভ, ১৮) ৬২৮ খায়বার বিজয়, ১৯) ৬২৯ প্রথম হজ্জ, ২০) ৬২৯ বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের উপর আক্রমণে ব্যর্থতা: মুতার যুদ্ধ,
২১) ৬৩০ রক্তপাতবিহীন মক্কা বিজয়, ২২) ৬৩০ হুনাইনের যুদ্ধ, ২৩) ৬৩০ তায়িফ অবরোধ, ২৪) ৬৩১ আরব উপদ্বীপের অধিকাংশ স্থানের শাসনক্ষমতা লাভ, ২৫) ৬৩২ ঘাসসানীয় সাম্রাজ্যের উপর আক্রমণ: তাবুক যুদ্ধ, ২৬) ৬৩২ বিদায় হজ্জ, ২৭) ৮ই জুন ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে রবিবারে বা ১১ হিজরি সালের রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সন্ধ্যায় ৬৩ বছর বয়সে তিনি মদিনায় আয়িশার গৃহে মৃত্যুবরণ করেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন থেকে আদর্শ ও কিছু উপদেশ
০১। সালাম দেয়া, তিনি সবাইকে কথা বলার আগে সালাম দেওয়ার উপদেশ দিয়েছেন, ০২। আল্লাহকে বেশি স্মরণ করা, সকল কাজে আল্লাহ তায়ালাকে স্বরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন, ০৩। তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা, হুজুর(সাঃ) বেশি বেশি তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেছেন এবং অন্যদেরও পরামর্শ দিতেন, ০৩। নামাজ পড়া, নামাজ হচ্ছে দুনিয়ার সকল ইবাদতের মধ্যে শেষ্ঠ ইবাদত। তিনি কোনো বিপদে পড়লে, কষ্ট বা হতাশা বা চিন্তাগ্রস্ত হলে সাথে সাথেই নামাজে দাড়িয়ে যেতেন, ০৪। নীরবতা পালন, ০৫। কম হাসা, ০৬। মুচকি হাসি, ০৭। প্রতিশোধ পরায়ন না হওয়া, ০৮। আঘাত না করা, ০৯। শিশুদের স্নেহ করা, ১০। পরিবারের সঙ্গে কোমল আচরণ, ১১। রোজা পালন, হুজুর(সঃ) সপ্তাহে দুই দিন সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা পালন করতেন, ১২। মেসওয়াক করা, ১৩। মিথ্যা কথা না বলা, ১৪। উপহার গ্রহণ করা, উপহার দেওয়া ও উপহার নেওয়া সুন্নাত, ১৫। সাদকা বা দান করা, ১৬। খাবারের দোষ না ধরা, ১৭। ক্ষমা করা, ১৮। কাউকে অবহেলা না করা, ১৯। সুস্পষ্ট কথা বলা।
এরকম আরো ইসলামিক তথ্য পেতে আমাদের ওয়েব সাইট eicenterbd.com ভিজিট করতে পারেন। google সহ বিভিন্ন উৎস হতে তথ্য প্রাপ্তির পর যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে এখানে প্রকাশ করা হয়।
Please follow and like us: