Passport/পাসপোর্ট কিভাবে সহজেই নিজে নিজে ঘরে বসে তৈরী করা যায় তা বিস্তারিতভাবে এই ব্লগে আলোচনা করা হয়েছে।
পাসপোর্ট কত প্রকার ও কি কি ?
বাংলাদেশে বর্তমানে দুই ধরনের পাসপোর্ট চালু রয়েছে ১। এমআরপি(মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট), ২। ই-পাসপোর্ট, ২০২০ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ায় বর্তমানে এমআরপি পাসপোর্টের থেকে ই-পাসপোর্ট বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কোন পাসপোর্ট করবেন দ্বিধায় ভুগছেন ?
সার্বিকদিক বিবেচনায় আমি আপনাকে বলবো আপনি ই-পাসপোর্ট করেন, যদি এমআরপি পাসপোর্টের থেকে সামান্য খরচ বেশি হয় তারপরেও কিছু বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট ০৩ প্রকার
১। অর্ডিনারি পাসপোর্ট/সাধারণ পাসপোর্ট। (সবুজ রংয়ের)
২। অফিসিয়াল/সরকারী পাসপোর্ট। (নীল রংয়ের)
৩। কূটনৈতিক (ডিপ্লোম্যাটিক) পাসপোর্ট। (লাল রংয়ের)
তবে এছাড়াও বাংলাদেশে স্পেশাল বা বিশেষ Passport রয়েছে। বিশেষ Passport দিয়ে কেবল মাত্র ভারতে যাওয়া যায়, বিধায় সেটি ইন্ডিয়ান পাসপোর্ট নামেও পরিচিত।
সাধারণ পাসপোর্টঃ-
বাংলাদেশের নাগরিক এমন সকল ব্যক্তি Passport পাওয়ার যোগ্য এবং সাধারণ পাসপোর্ট পাবেন যা সবুজ রংয়ের।
অফিসিয়াল/সরকারী পাসপোর্টঃ-
সরকারী ৯ম গ্রেড হতে উর্ধ্বতন গ্রেডের কোন কর্মকর্তা সরকারী আদেশে(GO) সরকারী কাজে বিদেশ ভ্রমন করলে বিনা খরচে এই পাসপোর্ট প্রদান করা হয়। তবে সরকারী আদেশে হজ্ব পালনের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য। এই পাসপোর্ট নীল রংয়ের। সরকারি চাকরিজীবীদের কে অনলাইন আবেদন করার সময় সাধারণ পাসপোর্ট হিসাবে আবেদন করতে হবে পরবর্তীতে পাসপোর্ট অফিস কর্তৃক এনরোলমেন্ট করার সময় অফিসিয়াল হিসাবে চিহ্নিত করতে করেন। অফিসিয়াল পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে কোন প্রকার অ্যাপয়েন্টমেন্ট শিডিউল গ্রহন করতে হবে না। এই পাসপোর্ট করতে এনওসি(NOC) জমা দিতে হবে। ফলে কোন পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে না।
কূটনৈতিক (ডিপ্লোম্যাটিক) পাসপোর্টঃ-
এই পাসপোর্ট পাবেন রাষ্ট্রপ্রধান, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীসভার সদস্যগণ, সংসদ সদস্য এবং তাদের স্পাউস অর্থাৎ স্বামী বা স্ত্রী। সেই সঙ্গে উচ্চতর আদালতের বিচারপতিগণ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রধান, মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ এবং বিদেশে বাংলাদেশি মিশনে কর্মরত কর্মকর্তারা এই পাসপোর্ট পাবেন। যার রং লাল, এই পাসপোর্ট যাদের আছে তাদের বিদেশ ভ্রমণের জন্য কোন ভিসা প্রয়োজন হয় না। তারা সংশ্লিষ্ট দেশে অবতরণের পর অন-অ্যারাইভাল ভিসা পান। ডিপ্লোম্যাটিক বা কূটনৈতিক পাসপোর্ট সব দেশেই লাল রং এর হয়ে থাকে।
Passport এর মেয়েদ কত দিন এবং কত পৃষ্টার হয়ে থাকে ?
বাংলাদেশে ০৫(পাঁচ) বছর এবং ১০ (দশ) বছর মেয়াদী পাসপোর্ট চালু আছে। ৪৮ পৃষ্টা এবং ৬৪ পৃষ্টার পাসপোর্ট রয়েছে। আপনি যদি খুববেশি বা ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ করেন তাহলে ৬৪ পৃষ্টার পাসপোর্ট ইস্যু করতে পারেন।
Passport ফি কত ?
ই-পাসপোর্ট
সাধারণ ফি ৪৮ পৃষ্টা ০৫ বছর মেয়াদী ৪০২৫/-
জরুরী ফি ৪৮ পৃষ্টা ০৫ বছর মেয়াদী ৬৩২৫/-
অতীব জরুরী ফি ৪৮ পৃষ্টা ০৫ বছর মেয়াদী ৮৬২৫/-
সাধারণ ফি ৬৪ পৃষ্টা ০৫ বছর মেয়াদী ৬৩২৫/-
জরুরী ফি ৬৪ পৃষ্টা ০৫ বছর মেয়াদী ৮৬২৫/-
অতীব জরুরী ফি ৬৪ পৃষ্টা ০৫ বছর মেয়াদী ১২০৭৫/-
সাধারণ ফি ৪৮ পৃষ্টা ১০ বছর মেয়াদী ৫৭৫০/-
জরুরী ফি ৪৮ পৃষ্টা ১০ বছর মেয়াদী ৮০৫০/-
অতীব জরুরী ফি ৪৮ পৃষ্টা ১০ বছর মেয়াদী ১০৩৫০/-
সাধারণ ফি ৬৪ পৃষ্টা ১০ বছর মেয়াদী ৮০৫০/-
জরুরী ফি ৬৪ পৃষ্টা ১০ বছর মেয়াদী ১০৩৫০/-
অতীব জরুরী ফি ৬৪ পৃষ্টা ১০ বছর মেয়াদী ১৩৮০০/-
এমআরপি পাসপোর্ট
সাধারণ ফি ৩৪৫০/-
জরুরী ফি ৬৯০০/-
হাতে পেতে কতদিন সময় লাগে ?
সাধারন ফি বাবদ ২১ দিন।
জরুরী ফি বাবদ ১০ দিন এবং
অতি জরুরী ফি বাবদ ০২ দিন।
সাধারণ ফি জমা দিলে ২১ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার কথা থাকলেও অঞ্চল ও ক্ষেত্র বিশেষ হাতে পেতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগতে পারে, জরুরীর ক্ষেত্রে ১০ হলেও ১৫-২০ দিন এবং অতি জরুরী পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ১ সপ্তাহের মত সময় লাগতে পারে। যদিও দিন দিন সেবার মান উন্নত হচ্ছে একসময় হয়তো যথা সময়ে হাতে পাওয়া যাবে পাসপোর্ট।
Passport আবেদন করতে কি কি প্রয়োজন ?
১. NID কার্ড নিজ এবং পিতা – মাতার।
২. কারো এনআইডি কার্ড না থাকলে জন্মনিবন্ধন দিয়ে আবেদন করা যাবে এক্ষেত্রে ১৮ বছর এর নিচে হতে হবে এবং পিতা মাতারও জম্মনিবন্ধন লাগবে, NID দিয়ে হবে নাহ।
৩. নাগরিক সনদ(ছবি যুক্ত)। ছবি যুক্ত হলে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নাই।
৪. পেশা অনুযায়ী কাগজপত্র (কোন সার্ভিসে থাকলে আইডি কার্ড তবে প্রাইভেট সার্ভিস হলে কাগজপত্র প্রয়োজন নেই) এনওসি থাকলে বিশেষ সুবিধা পাবেন এতে ভেরিফিকেশন প্রয়োজন হয়না, আবেদন দিলে সরাসরি দ্রুত সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট পাওয়া যায়।
৫. বিদ্যুৎ বিল এর কপি। ভাড়াটিয়া হলে বাড়ি ভাড়ার স্লিপ।
৬. ৬ বছর এর নিচের বাচ্চার ক্ষেত্রে ল্যাবপিন্ট ছবি জমা দিতে হয়।
৭. ছবি তুলতে যাওয়ার আগে রঙিন কাপড় পরিধান করলে ছবি ভালো আসে, সাদা কাপড়ে ছবি ভালো হয়না।
৮. টাকা জমার চালান কপি।
৯. অনলাইনে আবেদন এর প্রিন্ট কপি এবং ফিংগার প্রিন্ট এর সিডিউল পেইজ।
এগুলো নিয়ে সকাল সকাল লাইনে দাড়িয়ে যাবেন, পরবর্তীতে কোন রুমে যেতে হবে কি করতে হবে সব কিছু লাইন আপনাকে অটোমেটিকলি নিয়ে যাবে।
কিভাবে অনলাইনে ই-পাসপোর্টের আবেদন করতে হয় এবিষয়ে আমাদের ওয়েব সাইট e i center এ একটি বিস্তারিত ব্লগ রয়েছে যেটি দেখলে খুব সহজেই এমনকি ঘরে বসে মোবাইলেও আবেদন করতে পারবেন। ব্লগটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন এবং অনলাইনে আবেদন করতে passport অফিসের সাইটে গিয়ে প্রথমে লগইন করে তারপর শুরু করুন।